গায়ে জড়ানো বিদ্যুতের তার, গবেষণামূলক পরীক্ষা করতে গিয়েই মর্মান্তিক পরিণতি ছাত্রের!

ভিতরে ঢুকেই দেখেন, শরীরের নানা জায়গায় বৈদ্যুতিক তার জড়ানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে ছেলে। মৃতদেহের শরীরে বুকের দুদিকে পোড়া দাগ রয়েছে। যা থেকে অনুমান, বুকেই সে তার সংযোগ করেছিল।

Updated By: Nov 7, 2022, 06:26 PM IST
গায়ে জড়ানো বিদ্যুতের তার, গবেষণামূলক পরীক্ষা করতে গিয়েই মর্মান্তিক পরিণতি ছাত্রের!

ভবানন্দ সিং: পড়ার ঘর ভিতর থেকে বন্ধ। আর সেই বন্ধ ঘরের ভিতর থেকেই উদ্ধার হল দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রের বিদ্যুতের তার জড়ানো দেহ। মৃতের নাম অভীক দাস। রায়গঞ্জের সারদা বিদ্যামন্দির ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ছাত্র ছিল অভীক। ছোট থেকেই বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিভিন্ন জিনিস নিয়ে গবেষণার আগ্রহ ছিল। প্রাথমিকভাবে পরিবার মনে করছে, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংক্রান্ত কোনও গবেষণা করতে গিয়ে বিপত্তি ঘটেছে। ঝুঁকিপূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নিজের বিপদ ডেকে এনেছে অভীক। আর তার প্রাণ কাড়ল। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রায়গঞ্জ শহরের উকিলপাড়ায়। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিস।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, উকিলপাড়ার রায়গঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের ঠিক বিপরীতেই অভীকদের বাড়ি। অভীকের বাবা রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্ক বিভাগের অধ্যাপক। আর মা স্কুল শিক্ষিকা। বাবা, মা আর বৃদ্ধা ঠাকুমার সাথেই থাকত অভীক। রবিবার বাবা ও মা বালুরঘাটে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। বাড়িতে বৃদ্ধা ঠাকুমার সঙ্গে ছিল অভীক। বাবা অশোক দাস জানিয়েছেন, রবিবার অনেক রাতে বাড়িতে ফিরে ছেলের কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে পড়ার ঘরে গিয়ে ডাকেন। কিন্তু পড়ার ঘরে গিয়ে দেখেন ভিতর থেকে দরজা বন্ধ। অনেক ডেকেও ঘর না খোলায়, দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন। ভিতরে ঢুকেই দেখেন, শরীরের নানা জায়গায় বৈদ্যুতিক তার জড়ানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে ছেলে। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিস। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। পড়ার ঘরটিও তদন্তের স্বার্থে সিল করে দিয়েছে পুলিস। পরিবার ও পরিচিতরা জানান, ছোট থেকেই বিজ্ঞান ও বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি আগ্রহ-ই শুধু নয়, সেসব নিয়ে গবেষণা করা যেন ছিল তার নেশা। আগুন, বিদ্যুৎ নিয়ে এর আগেও সে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করেছে বলে জানিয়েছেন অভীকের বাবা। এর পাশাপাশি, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও কিছু দেখেও সে প্রভাবিত হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান। মৃতদেহের শরীরে বুকের দুদিকে পোড়া দাগ রয়েছে। যা থেকে অনুমান, বুকেই সে তার সংযোগ করেছিল।

কিন্তু শুধু-ই কি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার ঝোঁক থেকে বিপত্তি নাকি এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে? সবদিক খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিস। ক্লাসের শান্ত স্বভাবের, মেধাবী ছাত্রের মৃত্যুতে শোকাহত স্কুল শিক্ষকেরাও। স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল জানিয়েছেন, স্কুলের তরফে কোনও বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংক্রান্ত কোনও অ্যাসাইনমেন্ট বা প্রোজেক্ট দেওয়া হয়নি।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

Tags:
.